রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাণী উক্তি ও উদ্ধৃতি
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একজন বাঙালি কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, শিল্পী, সংগীতজ্ঞ, দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ। তিনি বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের একজন। তার রচনাগুলি বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রথম ভারতীয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তিগুলি তার জীবনদর্শন, সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং দার্শনিক চিন্তার প্রতিফলন। তার উক্তিগুলি সহজ কিন্তু গভীর অর্থপূর্ণ, এবং তারা জীবনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করার জন্য আমাদের উৎসাহিত করে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কিছু বিখ্যাত উক্তি নীচে দেওয়া হল:
- আমার তৃষ্ণা তোমার সুধা, তোমার তৃপ্তি আমার সুধা।
- প্রাণের সাধন কবে নিবেদন করেছি চরণতলে, অভিষেক তার হল না তোমার করুণ নয়নজলে।
- গোলাপ যেমন একটি বিশেষ জাতের ফুল, বন্ধু তেমনি একটি বিশেষ জাতের মানুষ।
- সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ।
- আমি তোমাকে অসংখ্য ভাবে ভালবেসেছি, অসংখ্যবার ভালবেসেছি, এক জীবনের পর অন্য জীবনেও ভালবেসেছি, বছরের পর বছর, সর্বদা, সবসময়।
- সোহাগের সঙ্গে রাগ না মিশিলে ভালবাসার স্বাদ থাকেনা – তরকারীতে লঙ্কামরিচের মত।
- আমার মৃত্যুকালে তোমাকে যে- কথাটা বলিব মনে করিয়াছিলাম, আজ তাহা বলিতে ইচ্ছা করিতেছে। আজ মনে হইতেছে, তুমি আমাকে যত শাস্তি দাও- না কেন আমি বহন করিতে পারিব।
- নারী দাসী বটে, কিন্তু সেই সঙ্গে নারী রাণীও বটে।
- আগুনকে যে ভয় পায়, সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারে না।
- সাত কোটি বাঙালিরে হে মুগ্ধ জননী রেখেছ বাঙালি করে মানুষ করনি।
- তোমার অশোকে কিংশুকে, অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে।
- প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস, তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।
- প্রতিভা তর্ক করেনা সৃষ্টি করে।
- আমি আগুনের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এসেছি, যা পোড়াবার তা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, যা বাকি আছে তার আর মরণ নেই।
- অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার ধরিয়া রাখার মত বিড়ম্বনা আর হয় না।
- পৃথিবীতে নারীর প্রথম প্রেমের মত সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নেই। প্রথম যৌবনে নারী যাকে ভালোবাসে, তার মতো সৌভাগ্যবানও আর কেউই নেই। যদিও সেই প্রেম অধিকাংশ সময় অপ্রকাশিত থেকে যায় কিন্তু সেই প্রেমের আগুন সব নারীকে সারাজীবন পোড়ায়।
- সীমা আছে এ কথা যেমন নিশ্চিত, অসীম আছেন এ কথা তেমনি সত্য। আমরা উভয়কে যখন বিচ্ছিন্ন করিয়া দেখি তখনি আমরা মায়ার ফাঁদে পড়ি। তখনি আমরা এমন একটা ভুল করিয়া বসি যে, আপনার সীমাকে লঙ্ঘন করিলেই বুঝি আমরা অসীমকে পাইব – যেন আত্মহত্যা করিলেই অমরজীবন পাওয়া যায়। যেন আমি না হইয়া আর-কিছু হইলেই আমি ধন্য হইব। কিন্তু, আমি হওয়াও যা আর-কিছু হওয়া যে তাহাই, সে কথা মনে থাকে না। আমার এই আমির মধ্যে যদি ব্যর্থতা থাকে তবে অন্য কোনো আমিত্ব লাভ করিয়া তাহা হইতে নিষ্কৃতি পাইব না। আমার ঘটের মধ্যে ছিদ্র থাকাতে যদি জল বাহির হইয়া যায়, তবে সে জলের দোষ নহে। দুধ ঢালিলেও সেই দশা হইবে, এবং মধু ঢালিলেও তথৈবচ।
- চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি।
- প্রেমের মধ্যে ভয় না থাকলে রস নিবিড় হয় না।
- নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস। নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে; কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তিগুলি আমাদেরকে চিন্তাভাবনা করার জন্য, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করার জন্য এবং আমাদের জীবনকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য উৎসাহিত করে।